হনুমান চালিশা হলো ভগবান হনুমানের উদ্দেশ্যে রচিত একটি শক্তিশালী স্তোত্র। কবি তুলসীদাস ১৬শ শতকে এটি রচনা করেন। মোট ৪০টি চরণ বা চৌপদীর জন্যই একে “চালিশা” বলা হয়। এই মন্ত্র শুধু ধর্মীয় নয়, আত্মিক এবং মানসিক শক্তির উৎস।
হনুমান চালিশার প্রতিটি চরণ ভক্তির বার্তা বহন করে। বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের জন্য হনুমান চালিশা বাংলা অর্থ সহ পাঠ করা আরও তাৎপর্যপূর্ণ।
শ্রী গুরু চরণ সরোজ রজ নিজমন মুকুর সুধারি |
বরণৌ রঘুবর বিমলযশ জো দাযক ফলচারি ||
বুদ্ধিহীন তনুজানিকৈ সুমিরৌ পবন কুমার |
বল বুদ্ধি বিদ্যা দেহু মোহি হরহু কলেশ বিকার্ ||
বাংলা অনুবাদ : শ্রী গুরু চরণ রূপ কমলের পরাগের দ্বারা নিজের মন রূপ দর্পণ পরিষ্কার করে রঘুবর শ্রীরামচন্দ্রের বিমল বর্ণনা করতে প্রবৃত্তি হচ্ছে। শ্রী রামের এই কীর্তিগাথা ( ধর্ম, অর্থ, কাম এবং মোক্ষ ) চতুর্বিধ পুরুষার্থই প্রদান করে। কিন্তু আমি যে নিতান্ত নির্বোধ তা বুঝে পবন নন্দন হনুমান কে স্মরণ করছি। প্রভু আপনি কৃপা করে আমার সেই ক্ষমতা বুদ্ধি এবং বিদ্যা দান করুন, আমার সর্বপ্রকার ক্লেশ এবং তজ্জনিত বিকার সমূহ হরণ করুন।
চৌপাঈ
জয় হনুমান জ্ঞান গুণ সাগর |
জয় কপীশ তিহু লোক উজাগর || এক ||
বাংলা অনুবাদ : হে হনুমান, হে কবিশ্রেষ্ঠ, আপনার জয় হোক। জ্ঞান ও গুণের সাগর স্বরূপ আপনি।ত্রিভুবনে প্রসিদ্ধ আপনার নাম।
রামদূত অতুলিত বলধামা |
অংজনি পুত্র পবনসুত নামা || দুই ||
বাংলা অনুবাদ : আপনি শ্রী রামের দূত।অতুলনীয় আপনার বল ও তেজ। অঞ্জনার পুত্র আপনি, পবন নন্দন নামেও আপনি পরিচিত।
মহাবীর বিক্রম বজরংগী |
কুমতি নিবার সুমতি কে সংগী |তিন||
বাংলা অনুবাদ : আপনি মহাবীর, মহাবিক্রমশালী, বজরংবলী। আপনি কুমতির নিবারণকর্তা এবং শুভ বুদ্ধির সঙ্গী।
কংচন বরণ বিরাজ সুবেশা |
কানন কুংডল কুংচিত কেশা ||চার||
বাংলা অনুবাদ : স্বর্নবর্ণ দেহে শোভন বেশে কর্ণে কুন্ডল এবং কুঞ্ছিত কেশের দর্শনীয় আপনার রুপ।
হাথবজ্র ঔ ধ্বজা বিরাজৈ |
কাংথে মূংজ জনেবূ সাজৈ || পাঁচ ||
বাংলা অনুবাদ : আপনার হাতে বজ্র এবং ধ্বজা বিরাজিত, স্কন্ধে মুঞ্জাতৃণ নির্মিত উপবীত শোভমান।
শংকর সুবন কেসরী নংদন |
তেজ প্রতাপ মহাজগ বংদন || ছয় ||
বাংলা অনুবাদ :মহাদেবের অংশে জাত আপনি, বানর শ্রেষ্ঠ কেশরী আপনার পিতা। তেজস্ক্রিয়তা এবং প্রতাপে আপনি সর্ব জগতে পূজনীয়।
বিদ্যাবান গুণী অতি চাতুর |
রাম কাজ করিবে কো আতুর || সাত ||
বাংলা অনুবাদ : বিদ্যা ও গুনে ভূষিত আপনি উদ্দেশ্য সাধনে অতিশয় দক্ষ ও চতুর শ্রী রামের কার্য সম্পাদনে আপনি সর্বদা তৎপর।
প্রভু চরিত্র সুনিবে কো রসিযা |
রামলখন সীতা মন বসিযা || আট ||
বাংলা অনুবাদ :প্রভু শ্রী রামচন্দ্রের চরিত কথার রসগ্রাহী শ্রোতা আপনি আপনার হৃদয়ের শ্রী রাম,লক্ষণ ও সীতার বসতি।
সূক্ষ্ম রূপধরি সিযহি দিখাবা |
বিকট রূপধরি লংক জরাবা || নয় ||
বাংলা অনুবাদ :সীতাদেবীর কাছে আপনি ক্ষুদ্র দেহ ধারণ করে দেখা দিয়েছিলেন। লঙ্কা দহন এর সময় বিকট আকার ধারণ করেছিলেন।
ভীম রূপধরি অসুর সংহারে |
রামচংদ্র কে কাজ সংবারে || দশ ||
বাংলা অনুবাদ : রাক্ষস দের সংহারকালে আপনার রুপ অতি ভয়ংকর। এইভাবে শ্রীরামচন্দ্রের কাজের জন্য আপনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপ ধারণ করেন
লায সংজীবন লখন জিযাযে |
শ্রী রঘুবীর হরষি উরলাযে || এগারো ||
বাংলা অনুবাদ : মৃতসঞ্জীবনী ঔষধি নিয়ে এসে আপনি শ্রী লক্ষণকে পুনর্জীবিত করেন। আনন্দচিত্তে শ্রীরাম আপনাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন।
রঘুপতি কীন্হী বহুত বডাযী |
তুম মম প্রিয ভরতহি সম ভাযী || বারো ||
বাংলা অনুবাদ : রঘুপতি আপনার অশেষ প্রশংসা করেন এবং আপনাকে তার ভরতের সমান ভাই বলেন।
সহস বদন তুম্হরো যশগাবৈ |
অস কহি শ্রীপতি কংঠ লগাবৈ || তেরো ||
বাংলা অনুবাদ :আমি সহস্র বদনে তোমার যশ কীর্তন করি এই কথা বলে শ্রীরাম আপনাকে কণ্ঠলগ্ন করেন।
সনকাদিক ব্রহ্মাদি মুনীশা |
নারদ শারদ সহিত অহীশা || চোদ্দ ||
বাংলা অনুবাদ : ব্রম্ভাদি দেবশ্রেষ্টগণ স্বয়ং দেবী সরস্বতী সনকাদীক মুনি চতুষ্টয় অনন্তনাগ নারদ সহ অন্যান্য ঋষি বৃন্দ আপনার যশ কৃত্তন করেন।
যম কুবের দিগপাল জহাং তে |
কবি কোবিদ কহি সকে কহাং তে |পনেরো||
বাংলা অনুবাদ : যমরাজ কুবের আদি দিশার রক্ষক, বিদ্যমান পন্ডিত আপনার যশ এর বর্ণনা করতে পারেনা।
তুম উপকার সুগ্রীবহি কীন্হা |
রাম মিলায রাজপদ দীন্হা || ষোল ||
বাংলা অনুবাদ : আপনি সুগ্রীবের সঙ্গে রামের মিলন ঘটিয়ে তাকে রাজপদে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে তার পরম উপকার সাধন করেছিলেন।
তুম্হরো মংত্র বিভীষণ মানা |
লংকেশ্বর ভযে সব জগ জানা || সতের ||
বাংলা অনুবাদ : বিভীষন আপনার পরামর্শ মেনে ছিলেন এবং তার পরিনামে তিনি লাঙ্কার অধীশ্বর হয়েছিলেন একথা জগতের সকলেই জানে।
যুগ সহস্র যোজন পর ভানূ |
লীল্যো তাহি মধুর ফল জানূ || আঠারো ||
বাংলা অনুবাদ : এক যুগ সহস্র যোজন দূরে অবস্থিত যে সুর্যদেব তাকে আপনি মিষ্ট ফল জ্ঞানে গ্রহণ করতে উদ্যত হয়েছিলেন।
প্রভু মুদ্রিকা মেলি মুখ মাহী |
জলধি লাংঘি গযে অচরজ নাহী || উনিশ ||
বাংলা অনুবাদ : আপনি শ্রীরামচন্দ্রের আংটি মুখে নিয়ে সাগর লঙঘন করে পরাপারে গেছিলেন – এতে আশ্চর্যের কিছু নেই।
দুর্গম কাজ জগত কে জেতে |
সুগম অনুগ্রহ তুম্হরে তেতে || কুড়ি ||
বাংলা অনুবাদ : জগতে যত দুষ্কর কাজ রয়েছে সবই আপনার কৃপায় সহজসাধ্য হয়ে ওঠে।
রাম দুআরে তুম রখবারে |
হোত ন আজ্ঞা বিনু পৈসারে || একুশ ||
বাংলা অনুবাদ : শ্রী রামের দ্বারে আপনি রক্ষক। আপনার অনুমতি ব্যতীত কেউ এখানে প্রবেশ করতে পারে না। অর্থাৎ আপনার কৃপা ব্যতিত ভগবান রামের প্রতি ভক্তি লাভ হয় না।
সব সুখ লহৈ তুম্হারী শরণা |
তুম রক্ষক কাহূ কো ডর না || বাইশ ||
বাংলা অনুবাদ : যে আপনার শরণ নেয় সে স্বর্গ সুখ লাভ করে। আপনি যাকে রক্ষা করেন কারো কাছ থেকে তার আর ভয় থাকে না।
আপন তেজ তুম্হারো আপৈ |
তীনোং লোক হাংক তে কাংপৈ || তেইশ ||
বাংলা অনুবাদ : আপনার তেজ একমাত্র আপনি সম্বরন করতে পারেন। আপনার হুংকারে ত্রিভুবন কম্পিত হয়।
ভূত পিশাচ নিকট নহি আবৈ |
মহবীর জব নাম সুনাবৈ || চব্বিশ ||
বাংলা অনুবাদ : মহাবীর হনুমান এর নাম যেখানে উচ্চারিত হয় ভূত পিশাচ সে স্থানের নিকট আসতে পারে না।
নাসৈ রোগ হরৈ সব পীরা |
জপত নিরংতর হনুমত বীরা || পঁচিশ ||
বাংলা অনুবাদ : নিরন্তর হনুমানের নাম জপ করলে সর্বপ্রকার রোগ পীড়া বিনষ্ট হয়।
সংকট সেং হনুমান ছুডাবৈ |
মন ক্রম বচন ধ্যান জো লাবৈ || ছাব্বিশ ||
বাংলা অনুবাদ : সংকটে পতিত হলে শ্রী হনুমান এর নাম কীর্তন,মনে তাকে স্মরণ এবং ক্রমশ তাকে ধ্যান করলে সেই সংকট থেকে তাকে তিনি মুক্ত করেন।
সব পর রাম তপস্বী রাজা |
তিনকে কাজ সকল তুম সাজা || সাতাশ ||
বাংলা অনুবাদ : তাপস্বী শ্রীরাম জগতের সকলের প্রভু। সেই মহামহীমাশালীর সকল গুরুতর কর্মসমূহের দায়িত্ব পালন আপনার পক্ষে সম্ভব হয়েছিল।
ঔর মনোরধ জো কোযি লাবৈ |
তাসু অমিত জীবন ফল পাবৈ || আঠাশ ||
বাংলা অনুবাদ : অন্য যে কোন মনোবাসনা নিয়ে যে আপনার দারস্ত হয়। সেই অনন্ত জীবনের জন্য সেই সব ফললাভ করে।
চারো যুগ পরিতাপ তুম্হারা |
হৈ পরসিদ্ধ জগত উজিযারা || উনত্রিশ ||
বাংলা অনুবাদ : সর্বজগতেই একথা প্রসিদ্ধ আছে যে চার যুগেই আপনার প্রতাপ সমুজ্জল ভাবে বর্তমান।
সাধু সংত কে তুম রখবারে |
অসুর নিকংদন রাম দুলারে || ত্রিশ ||
বাংলা অনুবাদ : অসাধু সজ্জনগনের আপনি রক্ষাকর্তা, অসুরদের বিনাশকারী এবং শ্রীরামচন্দ্রের একান্ত প্রিয়পাত্র।
অষ্ঠসিদ্ধি নব নিধি কে দাতা |
অস বর দীন্হ জানকী মাতা || একত্রিশ ||
বাংলা অনুবাদ : মাতা জনকীদেবী আপনাকে এরুপ বর দিয়েছিলেন যে, আপনি ইচ্ছা করলেই অষ্ট সিদ্ধি এবং নয় প্রকারম সম্পদ দান করতে পারেন।
রাম রসাযন তুম্হারে পাসা |
সাদ রহো রঘুপতি কে দাসা || বঁত্রিশ ||
বাংলা অনুবাদ : শ্রী রামের প্রতি প্রেমভক্তি আপনার ভান্ডারে বিদ্যমান। হে রঘুপতি দাস মহাবীর হনুমান আপনি সর্বদা আমার নিকট থাকুন।
তুম্হরে ভজন রামকো পাবৈ |
জন্ম জন্ম কে দুখ বিসরাবৈ || তেঁত্রিশ ||
বাংলা অনুবাদ : আপনার ভজনা করলে তা প্রকৃতপক্ষে শ্রী রামের উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয় এবং শ্রী রামের প্রতি সম্পাদন করে। জন্ম-জন্মান্তরের সঞ্চিত দুঃখ ভুলিয়ে দেয়।
অংত কাল রঘুবর পুরজাযী |
জহাং জন্ম হরিভক্ত কহাযী || চৌত্রিশ ||
বাংলা অনুবাদ : যেখানেই সেই ভোজনকারী জন্ম হোক না কেন তা ভগবদ্ভক্ত রূপেই তার পরিচিত হয় এবং এতে তিনি শ্রী রামের নিত্য ধামে গমন করেন
ঔর দেবতা চিত্ত ন ধরযী |
হনুমত সেযি সর্ব সুখ করযী || পঁত্রিশ ||
বাংলা অনুবাদ :অপর কোন দেবতার প্রতি চিত্ত নিবিষ্ট না করেও কেবল হনুমানের সেবা করলে সর্ব ফললাভ হতে পারে।
সংকট কটৈ মিটৈ সব পীরা |
জো সুমিরৈ হনুমত বল বীরা || ছঁত্রিশ ||
বাংলা অনুবাদ :যিনি মহাবলীবীর্যসমন্বিত শ্রী হনুমান কে স্মরণ করেন তার সকল সংক্রমিত হয় সর্ব রোগ নিরাময় হয়।
জৈ জৈ জৈ হনুমান গোসাযী |
কৃপা করো গুরুদেব কী নাযী || সাঁইত্রিশ ||
বাংলা অনুবাদ : হে প্রভু হনুমানজি, আপনার জয় হোক, জয় হোক, জয় হোক। গুরুদেব যেমন তার শীষ্যের প্রতি অনুগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন সেই রকম আপনিও আমাকে কৃপা করুন।
জো শত বার পাঠ কর কোযী |
ছূটহি বংদি মহা সুখ হোযী || আঁটত্রিশ ||
বাংলা অনুবাদ : এই হনুমান চালিশা যে শত বার পাঠ করবে তার বন্ধনমুক্তি ঘটবে এবং সে প্রভূত সুখ সৌভাগ্য লাভ করবে।
জো যহ পডৈ হনুমান চালীসা |
হোয সিদ্ধি সাখী গৌরীশা || উনচল্লিশ ||
বাংলা অনুবাদ :যে কেউ এই হনুমান চালিশা পাঠ করবে তার সিদ্ধিলাভ হবে। এ বিষয়ে স্বয়ং মহাদেব প্রমাণ।
তুলসীদাস সদা হরি চেরা |
কীজৈ নাথ হৃদয মহ ডেরা || চল্লিশ ||
বাংলা অনুবাদ : তুলসীদাস সদাসর্বদাই শ্রী হরির সেবক,দাসানুদাস।হে প্রভু আপনি তার হৃদয়টিকে আপনার বাসস্থানে পরিণত করুন অর্থাৎ তার হৃদয়ে নিত্য বাস করুন।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ: হনুমান চালিশা বাংলায় পাঠ করে হনুমানজিকে সমর্পন করতে হলে এই জিনিসটি অনুসরণ করুন।
Special Note: To dedicate your reciting of Hanuman Chalisa in Bengali to Hanumanji, you must follow these step.
“শেষ পংক্তিতে কবির নামের বদলে আপনার নিজের নাম উল্লেখ করলে, হনুমান চালিশা পাঠ আপনার তরফ থেকে ভগবানের উদ্দেশে আপনার থেকেই সমর্পন করা হবে। তাই তুলসীদাস এর পরিবর্তে নিজের নাম বলবেন।”
দোহা পবন তনয সংকট হরণ – মংগল মূরতি রূপ্ |
রাম লখন সীতা সহিত – হৃদয বসহু সুরভূপ্ ||
বাংলা অনুবাদ : শ্রী রাম লক্ষণ এবং সীতাদেবী সহ সংকটমোচন, মঙ্গলময় বিগ্রহ সুরশ্রেষ্ঠ শ্রীপবননন্দন আমার হৃদয় বসতি করুন।
ঐশ্বরিক সুরক্ষা: হনুমান চালিসা পাঠ করা ভগবান হনুমানের আশীর্বাদ এবং সুরক্ষাকে আহ্বান করে, শক্তি, সাহস এবং ভক্তির প্রতীক। এটি ভক্তদের নরক শক্তির হাত থেকে রক্ষা করে এবং নিরাপত্তা ও নির্ভীকতার অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।
বাধা অপসারণ: ভগবান হনুমান বাধা বিপত্তির বিজয়ী হিসাবে সম্মানিত। আন্তরিকতা এবং ভক্তি সহকারে হনুমান চালিসা জপ করা শারীরিক এবং আধ্যাত্মিক উভয় বাধা অতিক্রম করতে সাহায্য করে, সাফল্য এবং সমৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করে।
আধ্যাত্মিক উন্নতি: হনুমান চালিসা আধ্যাত্মিক বৃদ্ধি এবং অভ্যন্তরীণ রূপান্তরের জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। এটি ঈশ্বরের সাথে গভীর সংযোগ স্থাপন করে, ভক্তদের হৃদয়ে নম্রতা, কৃতজ্ঞতা এবং ভক্তি জাগিয়ে তোলে।
স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা: এটা বিশ্বাস করা হয় যে হনুমান চালিসা জপ করলে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বৃদ্ধি পায়। এটি মনকে শুদ্ধ করে, নেতিবাচকতা দূর করে এবং অভ্যন্তরীণ শান্তি ও সম্প্রীতির অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।
ভগবান রামের আশীর্বাদ: হনুমান চালিসা ভগবান রামের গুণাবলী এবং তাঁর প্রতি হনুমানের অটল ভক্তির প্রশংসা করে। এটি জপ করার মাধ্যমে, ভক্তরা ভগবান রামের আশীর্বাদ এবং কৃপা আকর্ষণ করে, আধ্যাত্মিক বিবর্তন এবং ঐশ্বরিক অনুগ্রহকে উত্সাহিত করে।
হনুমান চালিসা দিনের যে কোন সময় আন্তরিকতা ও ভক্তি সহকারে জপ করা যায়। যাইহোক, কিছু শুভ সময় এর শক্তি বৃদ্ধি করে বলে মনে করা হয়:
ভোরবেলা: ভোরবেলা হনুমান চালিসা জপ করা, বিশেষত স্নান করার পরে, অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এটি দিনের জন্য একটি ইতিবাচক টোন সেট করে এবং হৃদয়কে ঐশ্বরিক শক্তি দিয়ে পূর্ণ করে।
মঙ্গলবার এবং শনিবার: এই দিনগুলি ভগবান হনুমানকে উত্সর্গ করা হয়। এই দিনগুলিতে ভক্তরা প্রায়শই হনুমান চালিসা উচ্চারণ করে শক্তিশালী দেবতার আশীর্বাদ এবং সুরক্ষা পেতে।
চ্যালেঞ্জিং সময়ে: যখন বাধা, অসুবিধা বা সঙ্কটের মুহুর্তের মুখোমুখি হন, হনুমান চালিসা জপ করা সান্ত্বনা, শক্তি এবং নির্দেশনা প্রদান করতে পারে, সাহস এবং স্থিতিস্থাপকতার সাথে প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে সাহায্য করে।
1. হনুমান চালিসা পাঠ করার সময় কি প্রতিটি শ্লোকের অর্থ জানা প্রয়োজন?
উত্তর: অর্থ বোঝার সময় জপ অভিজ্ঞতার গভীরতা যোগ করে, আন্তরিক ভক্তি এবং বিশ্বাস সর্বাগ্রে। শ্রদ্ধা এবং ভালবাসার সাথে জপ করা সমান কার্যকর।
2.অবাঙালি ভাষাভাষীরা কি বাংলায় হনুমান চালিসা উচ্চারণ করতে পারে?
উত্তর: একেবারে! হনুমান চালিসার ঐশ্বরিক কম্পন ভাষার বাধা অতিক্রম করে। ভক্তি এবং আন্তরিকতার সাথে জপ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
3.কতবার হনুমান চালিসা পাঠ করা উচিত?
উত্তরঃ কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই। ভক্তি সহকারে একবার জপ করা উপকারী, তবে ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিরা প্রায়শই ব্যক্তিগত প্রবণতা এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলন অনুসারে এটি একাধিকবার, যেমন 11, 21 বা 108 বার জপ করেন।
4. মহিলারা কি হনুমান চালিসা পাঠ করতে পারেন?
উত্তর: হ্যাঁ, একেবারে! হনুমান চালিসা লিঙ্গ নির্বিশেষে সবার জন্য উন্মুক্ত। ভক্তির কোন সীমা নেই।
5. হনুমান চালিসা পাঠ করার আগে কি কোন নির্দিষ্ট আচার পালন করতে হয়?
উত্তর: যদিও কোনও কঠোর আচার-অনুষ্ঠান নেই, তবে জপ করার আগে স্নান বা অযুর মাধ্যমে মন এবং শরীরকে শুদ্ধ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ধূপ বা প্রদীপ জ্বালানো পবিত্র পরিবেশে যোগ করে।
6. হনুমান চালিসা জপ করা কি বস্তুগত সমৃদ্ধি আনতে পারে?
উত্তর: যদিও জপের প্রাথমিক ফোকাস হল আধ্যাত্মিক উন্নতি, ভগবান হনুমানের আশীর্বাদগুলি বস্তুগত সুস্থতা সহ জীবনের সমস্ত দিককে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। তবে শুদ্ধ উদ্দেশ্য ও বিনয়ের সাথে জপ করা উচিত।
7. হনুমান চালিসা জপ করার জন্য কি কোন বিশেষ সুর বা সুর আছে?
উত্তর: হনুমান চালিসা বিভিন্ন সুর ও সুরে জপ করা যায়। এমন একটি বেছে নিন যা আপনার হৃদয়ে অনুরণিত হয় এবং আপনার ভক্তি বাড়ায়।
8. শিশুরা কি হনুমান চালিসা পাঠ করতে পারে?
উত্তর: হ্যাঁ, বড়দের নির্দেশে শিশুরা হনুমান চালিসা পাঠ করতে পারে। এটি অল্প বয়স থেকেই ভক্তি, সাহস এবং ধার্মিকতার মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলে।
9.জপ করার সময় ডায়েট বা লাইফস্টাইল সম্পর্কিত কোন নির্দিষ্ট নিয়ম আছে কি?
উত্তর: খাদ্যের কোনো কঠোর নিয়ম না থাকলেও, একটি সাত্ত্বিক (বিশুদ্ধ) খাদ্য বজায় রাখা এবং একটি পুণ্যময় জীবনযাপন করা জপের কার্যকারিতা বাড়ায়।
10. হনুমান চালিসা জপ করলে কি রোগ নিরাময় করা যায়?
উত্তর: যদিও জপ সামগ্রিক সুস্থতা এবং নিরাময়ে অবদান রাখতে পারে, তবে এটি চিকিৎসার বিকল্প নয়। এইটা স্বাস্থ্য উদ্বেগের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
বাংলায় হনুমান চালিসা হল একটি ঐশ্বরিক স্তোত্র যা ভক্তদের অগণিত আশীর্বাদ এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি প্রদান করে। ঐশ্বরিক সুরক্ষা, বাধা অপসারণ বা আধ্যাত্মিক বিবর্তনের জন্য আবৃত্তি করা হোক না কেন, এর শক্তি অতুলনীয়। বিশ্বাস এবং ভক্তির সাথে এর পবিত্র আয়াতগুলিকে আলিঙ্গন করে, একজন প্রভু হনুমানের অটল শক্তি এবং অনুগ্রহ দ্বারা পরিচালিত একটি গভীর আধ্যাত্মিক যাত্রা শুরু করে।
এইখানে আপনারা সব ধরণের খবর পাবেন সে যে কোনো বিষয়ে হোক । প্রধানত Trending & Viral news বিষয়ক কনটেন্ট পাবেন । তাড়াতাড়ি খবর দেয়ার জন্য কিছু তথ্য সত্যতা যাচাই না করেই হয় তো পোস্ট করা হতে পারে ।
Copyright © 2024-2025 Koti Takar Kotha(কোটি টাকার কথা). All Rights Reserved.
Priya Paul Roy
Priya Paul Roy় একজন অভিজ্ঞ লেখিকা এবং আর্থিক সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নিবেদিতপ্রাণ। তিনি "কোটি টাকার কথা" ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, যেখানে আর্থিক ব্যবস্থাপনা, বিনিয়োগ, শেয়ার বাজার, মিউচুয়াল ফান্ড, ব্যাঙ্ক পরিষেবা এবং অন্যান্ন বিষয় নিয়ে সহজবোধ্য তথ্য শেয়ার করা হয়। তার লক্ষ্য হলো আর্থিক বিষয়ে সাধারণ মানুষের ভীতি দূর করে জটিল ধারণাগুলোকে সহজ ভাষায় করা |